FB!

Wednesday, June 29, 2011

Department of Business Administration | Shahjalal University of Science & Technology

Department of Business Administration | Shahjalal University of Science & Technology

The Department of Business Administration established in 1998 under the School of Management and Business Administration and it was the first Business School in Sylhet region. The Department was initially organized under the supervision of only three teachers with a mission to produce qualified graduates in the field of Business. The Department has now 14 fulltime faculty members and about 450 students. It offers four years BBA and one year MBA program in Business administration with different wings like Accounting, Finance, HRM, Marketing, Management and Management Information System. The Department is famous for its dynamism. This heritage supports the department to be one of the best Departments in the University. The punctuality and hard labor of the faculties in teaching brought the outstanding achievement in the job market for outgoing batches those who have completed their BBA program from this department. Surviving in the global world the department of business administration is striving to produce expert human resources for today’s challenging business world.

Tuesday, February 22, 2011

Tourism In Bangladesh

One can easily get a great taste of Nature as well as touch of Indigenous people  by visiting Birishiri, Netrakona.


Here one can enjoy the beautiful natural scenes of rural Bangladesh and the hills made of China clay.

The clear water oh the river Sumeswary is also enjoyable here.

So lets visit Bangladesh and keep a schedule in Netrakona. 

 The Garo Pahar is situated there and people observe time-honored traditions. People living in Netrakona's mountains are the ancestors of the Indigenous . The onlyIndigenous(আদিবাসী) cultural academi in the country is there. Khaliyajuri is a place dominated by waterways; the small villages are organised into "islands".

 

http://en.wikipedia.org/wiki/Netrakona

Saturday, January 29, 2011

সবাই তো সুখী হতে চায়, তবু কেউ সুখী হয় কেউ হয় না....

সুখ জিনিসটা আসলে কী?
অগাধ বিত্ত-বৈভবের মালিক সুখ-সুখ করে মনে অসুখ বাঁধিয়ে ফেলে। কিন্তু সুখ তারে ধরা দেয় না। আর ঘরে দুই মুঠো অন্ন নেই, সেই মানুষ পরমানন্দে সকালের মিঠা রোদ গায়ে মেখে ঘুরছে। সত্যিকারের সুখ এমনই হয়। কৃত্রিমতাবর্জিত, সমাজ-সংসার, বস্তুজগৎ তার কাছে তুচ্ছ; মিছে মরীচিকা। সুখ কারও দেহে বা মস্তিষ্কে বাস করে না। এর স্থান মনের গহিন কোণে। যার ঝিলিক, আলোকচ্ছটা মানুষের মুখেও পড়ে।
বাহ্য জগতের কোনো বস্তুর ওপর নির্ভর না করে, অন্তরের অন্তস্তলের দিকে যদি তাকাই তাহলেই সুখ খুঁজে পাব; তার মানে দাঁড়াচ্ছে, সবার মাঝেই সুখ গ্রহণের ক্ষমতা আছে। ইচ্ছে করলে যে কেউ নিজেকে, নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সুখী হতে পারেন। শরীর সুস্থ রাখতে, ত্বক সুন্দর রাখতে আমরা হররোজ কত না সাধনা করি। ব্যায়াম, খাদ্যাভ্যাস থেকে শুরু করে ওষুধপত্র গ্রহণ চেষ্টার কমতি নেই আমাদের। শরীরের প্রতি আমরা এত যত্নবান, অথচ মনের দিকে নজর দিই না। ধ্যানের মধ্য দিয়ে মনের সেই সুস্থতা পাওয়া যাবে। তবে মেডিটেশন বা ধ্যান মানে এই নয়, কয়েক মুহূর্ত আমগাছের তলায় বসলাম, আর মনটাকে শূন্য করে দিলাম। ব্যস, হয়ে গেল! না, ধৈর্য ধরতে হবে। রোজ আধঘণ্টা করে ধ্যান করতে হবে। তাও কয়েক মাস চালিয়ে যেতে হবে। তা হলেই কাঙ্ক্ষিত ফল মিলবে।

ইচ্ছা করলেই পছন্দমতো দুনিয়াটাকে বদলে দিতে পারি না আমরা। কিন্তু আমরা আমাদের মনটাকে বদলাতে পারি। মনকে বদলাতে পারলে আমাদের নিজস্ব পৃথিবীটাও বদলে যাবে।
তবে সুখী হওয়ার পথে কিছু অন্তরায় আছে। যেমন আত্মম্ভরিতা, আত্মকেন্দ্রিকতা। এসব যার মধ্যে আছে ওই মানুষের পক্ষে সুখ নামক সোনার হরিণটি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। তাই নিজেকে জাহির করার প্রবণতা কমাতে হবে। অন্যের প্রতি সমবেদনা, সহমর্মিতা বাড়াতে হবে। উদার হতে হবে, মানুষকে নিঃশর্তভাবে ভালোবাসতে হবে। তবেই একদিন সুখী মানুষের জামাটি আপনার গায়ে চড়বে।
Courtesy By: Prothom Alo

Thursday, January 6, 2011

জননিরাপত্তা আর ঘুমপাড়ানির কথা (লেখক : দেবব্রত চক্রবর্তী বিষ্ণু, সাংবাদিক)

চারদলীয় জোটকে জনগণ কেন প্রত্যাখ্যান করে মহাজোটকে ক্ষমতায় বসিয়েছিল এর কারণ সচেতন মানুষমাত্রই জানেন। অনেক কারণের মধ্যে মুখ্যত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, অর্থাৎ জননিরাপত্তা ভেঙে পড়া ও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি অন্যতম প্রধান ভূমিকা পালন করেছিল। সব কিছু মিলিয়ে সার্বিক ক্ষেত্রে একটা পরিবর্তন চেয়ে মানুষ মহাজোটের পক্ষে প্রায় দুই বছর আগে রায় দিয়েছিল। এ দুই বছরের সার্বিক চিত্র নিয়ে আলোচনা এই ছোট্ট কলেবরে দুরূহ বটে; কিন্তু উলি্লখিত দুটি বিষয়ের কোনো একটিতেও মহাজোট সরকার সাফল্য দেখাতে পারেনি_এই বক্তব্য মোটা দাগে সত্য। দ্রব্যমূল্য নিয়ে নতুন করে আলোচনার কিছু নেই; ভুক্তভোগী মানুষ শুধু আশ্বাসে বিশ্বাস রেখেই চলেছে। মূল্য-সন্ত্রাসীরা সব কিছুর প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করে তাদের আখের গোছাচ্ছে। আর, আইনশৃঙ্খলা? এ তো গোদের ওপর এখন বিষফোঁড়া। অনস্বীকার্য যে মহাজোট সরকারের অর্জন অনেকখানি। কিন্তু উলি্লখিত দুটি বিষয় মানুষের স্বস্তি-শান্তি কেড়ে নিয়েছে। একেই বলে অর্জনের বিসর্জন। সংশ্লিষ্ট দুটি মন্ত্রণালয় কি এর দায় এড়াতে পারে? প্রায় নিত্য পত্র-পত্রিকায় জননিরাপত্তা বিঘি্নত হওয়ার যে চিত্র ফুটে উঠছে, তাতে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা রক্ষাসংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কার্যক্রম নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। একটা বিষয় খুব উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করা যাচ্ছে, সব ব্যাপারেই প্রধানমন্ত্রীকে কথা বলতে হচ্ছে! কেন? যদি তা-ই হয়, তাহলে এতগুলো মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্তরা কী করেন? সরকারের নির্বাহী প্রধান হিসেবে সব কিছুর দায় অবশ্যই সর্বাগ্রে প্রধানমন্ত্রীর ওপর বর্তায় বটে; কিন্তু তাঁকেই যদি সব দিকে দৃষ্টি রাখতে হয় তাহলে অবস্থা গিয়ে কোন পর্যায়ে ঠেকছে তাও সহজেই অনুমেয়। যানজটই বলি কিংবা বাজারই বলি অথবা জননিরাপত্তাজনিত বিষয়েই বলি_প্রায় সব ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রীকে দৃষ্টি রাখতে হচ্ছে, কথা বলতে হচ্ছে। গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থার ক্ষেত্রে তা স্বাভাবিক নয়। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী তো নিশ্চয়ই দশভুজা নন।
এ মুহূর্তে মনে পড়ছে এ দেশের মুক্তচিন্তা এবং মুক্তবুদ্ধির আন্দোলনে যিনি সবচেয়ে বেশি আলোড়ন তুলেছিলেন সেই প্রথাবিরোধী লেখক, শিক্ষাবিদ, কবি, ঔপন্যাসিক, গবেষক প্রয়াত ড. হুমায়ুন আজাদের কথা। অসামান্য মেধা এবং অপরিসীম সাহস নিয়ে ড. হুমায়ুন আজাদ এক রকম একাই লড়াই করে গেছেন। মৌলবাদী জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে তাঁর নির্ভীক উচ্চারণে ওরা ফুঁসে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত ওই ক্রোধ, জিঘাংসা চরিতার্থ করতে তাঁর ওপর ওরা ঝাঁপিয়েও পড়ল। রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত হুমায়ুন আজাদ (আক্রান্ত হয়ে যিনি শেষ পর্যন্ত বৈরী সময়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন, কিন্তু আজ পর্যন্ত ওই বর্বরতা-নৃশংসতার কোনো রহস্য উদ্ঘাটন এবং বিচারও হয়নি) দীর্ঘ সময় মৃত্যুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিলেন একই রকম সাহসের সঙ্গে। মনে পড়ে, হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে বর্ধিত জীবন নিয়ে ফিরে এসে আরো তীব্র ও তীক্ষ্নভাবে তিনি কথা বলেছেন। শিরদাঁড়া টান করেই বলেছিলেন কারা তাঁকে হত্যা করতে চেয়েছিল। মৃত্যুগুহা থেকে ফেরার পর আর খুব বেশিদিন প্রথাবিরুদ্ধ বিপ্লবী বুদ্ধিজীবী ওই মানুষটিকে আমরা আমাদের মাঝে পাইনি। ওই মর্মন্তুদ ঘটনা তাঁর আয়ুর অবশিষ্টাংশ কুরে কুরে খাচ্ছিল। আজকের মূল প্রসঙ্গ সেটা নয়। ড. হুমায়ুন আজাদের কথা মনে পড়ল তাঁর একটি বহুল আলোচিত বইয়ের নাম মনে আসার কারণে। সুলিখিত বইটির নাম 'সব কিছু ভেঙে পড়ে'। এ যে কতখানি সত্যি, কত ভয়ানক ও নিষ্ঠুরভাবেই সত্যি, তা আমাদের চারপাশে তাকালে বোঝা যায়। হ্যাঁ, সব কিছুই যেন ভেঙে পড়ছে। ঝুরঝুর করে ঝরে পড়ছে মানুষের ভেতরকার বিশ্বাস, আত্মশক্তি, চৈতন্য, মূল্যবোধ। দানব-পাশব শক্তি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে সর্বত্র। এমতাবস্থায় শান্তিপ্রিয় মানুষ দাঁড়াবে কোথায়? কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হলো, এরই মাঝে দায়িত্বশীলদের উচ্চারণসর্বস্ব অঙ্গীকার আর প্রতিশ্রুতি কিন্তু থেমে নেই।
'সব কিছু ভেঙে পড়ে' যখন ড. হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন তখন এই সমাজচিত্র কেমন ছিল, তা না হয় নতুন করে আলোচনা না-ই করলাম। কিন্তু পরিবর্তনকামী মানুষ এখন নতুন করে এ প্রশ্ন তুলতেই পারেন_প্রত্যাশায় আঘাত করে এখন সব কিছু ভাঙছে কেন? কোন অদৃশ্য শক্তি, কোন অশরীরী মায়াবী দানব মানুষের স্বস্তি, শান্তি, সমাজের শৃঙ্খলা গিলে ফেলছে? আমাদের বসবাস কি অদ্ভুত ঘুমপাড়ানির কোনো এক দেশে? মাঝেমধ্যে মনে হয়, আমরা ঘুমন্তপুরীর বাসিন্দা। মানুষ জীবন-জীবিকার তাগিদে চক্ষু নিমীলিত অবস্থায় যন্ত্রের মতোই করে যাচ্ছে যার যার কাজ এবং এর মধ্যেই করছে আত্মরক্ষার চেষ্টাও। এই ঘুমন্তপুরীর মাঝে কেবল জেগে আছে কিছু মুখোশধারী। ওরা ওদের মুখোশের আড়ালে দুটো তীক্ষ্ন চোখ দিয়ে খুঁজছে কোথায় কার তন্দ্রা ছুটে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে। কথাগুলো হতাশার নয়। নয় ক্ষোভেরও। কিন্তু প্রশ্নের পিঠে প্রশ্নসঞ্চারক তো বটেই। খুনি, ডাকাত, ছিনতাইকারী, ধর্ষক, ক্ষমতার অপব্যবহারকারী এই ক্ষমতাবানদের লাগাম কেউ টেনে ধরতে পারছে না। আইনি সংস্থার কতিপয় অদক্ষ, অযোগ্য, স্বেচ্ছাচারী আর অসাধু লোক যখন নিজেদের আখের গোছাতে ব্যস্ত থাকে, তখন এই মুখোশধারীরা তত বেশি উন্মত্ত হয়ে ওঠে_এটাই আমাদের সঞ্চিত অভিজ্ঞতা। দানব-পাশব শক্তির যে প্রতিক্রিয়াহীন পরিবেশ কাম্য, পরিস্থিতি যেন তা-ই। কারণ, এ রকম পরিবেশে অনেক অপকর্ম অনায়াসে সম্পাদন করে ফেলা যায়।
আজ (৩১.১২.২০১০) যখন এ লেখাটি লিখছি তখন গত দিনের প্রায় সব কটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা সামনে রয়েছে। প্রত্যেকটি পত্রিকা রাজধানীর তাঁতীবাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যার (২৯.১২.২০১০) সংবাদটি সংগত কারণেই গুরুত্বসহকারে ছেপেছে। প্রকাশ্য দিবালোকে নিজ ব্যবসাকেন্দ্রে ব্যবসায়ী আবুল কালামকে গুলিবিদ্ধ হয়ে প্রাণ হারাতে হলো। এর পর অস্ত্রধারীরা বরাবরের মতোই নির্বিঘ্নে চলেও গেল। এ রকম ঘটনা তাঁতীবাজারে এ-ই যে প্রথম ঘটল তাও নয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো একটি ঘটনার প্রতিকার হয়নি, বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্য। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় একজন তরুণ স্বর্ণ ব্যবসায়ী টেলিফোনে কাঁপা কাঁপা কণ্ঠে জানালেন, তাঁতীবাজারে চাঁদাবাজরা প্রায় প্রকাশ্যেই অস্ত্রের মহড়া দেয় এবং একেকটি স্বর্ণের দোকানের মালিকের কাছে নির্দিষ্ট পরিমাণ অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। দুর্মুখেরা বলে, এই চাঁদার ভাগ-বাটোয়ারা চলে যায় অনেক ওপরস্তর পর্যন্ত। কালাম যেদিন মারা গেল এর দুই দিন আগেও নাকি এমন ব্যাপারই পরিলক্ষিত হয়েছে। তরুণ ব্যবসায়ীটি যখন ফোনে এসব কথা জানাচ্ছিলেন তখন আমি বরিশাল লঞ্চ টার্মিনালে ঢাকায় ফেরার অপেক্ষায় ছিলাম। খুব কোলাহল এবং ভিড়ের মধ্যে থাকলেও তখন ওই তরুণ ব্যবসায়ীর ভয়ার্ত কণ্ঠে উচ্চারিত মর্মকথা বুঝতে কোনো অসুবিধা হয়নি।
শুধু তাঁতীবাজার কেন, ঢাকার অনেক এলাকায় এমন চিত্র বিদ্যমান। এর দুই দিন আগে মোহাম্মদপুরে সংশ্লিষ্ট থানায় একজন ব্যবসায়ী নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন করে ফেরার পথে খবর পেলেন তাঁর কর্মচারীকে দুর্বৃত্তরা গুলি করে দোকানেই হত্যা করেছে। ৩০ ডিসেম্বর ঝিনাইদহে যুবলীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে একই স্থানে নিহত হলেন তিনজন। একই দিনের পত্রিকায় খবর বেরোল, রংপুর কারমাইকেল কলেজের এক ছাত্রীকে মেসে ঢুকে ধর্ষণ করেছে এক দুর্বৃত্ত! মেসের মধ্যে ঢুকে এমন ঘটনা হয়তো এটাই এ দেশে প্রথম। এখানেই শেষ নয়। সে আবার পুরো দৃশ্যটি মোবাইল ফোনে ক্যামেরাবন্দি করে মেয়েটিকে হুমকি দিয়েছে, ঘটনাটি কাউকে জানালে আরো বিপদ হবে। যদিও পরে ওই ছাত্রী বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। ধারণা করা যায়, মেয়েটির ভবিষ্যৎ আরো অন্ধকারাচ্ছন্ন হলো এবং থানা-পুলিশ অতীতের মতোই এ ক্ষেত্রেও তাদের ব্যর্থতাই প্রদর্শন করবে। দেশে নারী নির্যাতন কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে তা নতুন করে ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ নিষ্প্রয়োজন। আরো খবর আছে ওই দিনের পত্রিকায়ই। ২৯ ডিসেম্বর বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন এমপির চট্টগ্রামের বাসাতে ১৫-১৬ জনের ডাকাত দল বাড়ির লোকজনকে জিম্মি করে অস্ত্রের মুখে লুটে নিয়েছে বেশ কিছু মালামাল। তখন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বাসাতেই ঘুমাচ্ছিলেন। একজন সাবেক মন্ত্রী ও বর্তমানে সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যানের বাসায় যখন এমন ঘটনা ঘটতে পারে, তখন সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তোলাও হয়তো অবান্তর।
দেশে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে থানার সংখ্যা ক্রম-বাড়লেও জননিরাপত্তা কোথায়_এ প্রশ্নের জবাব মেলা ভার। নানা দোষে দুষ্ট পুলিশ কেবল অজুহাতই দাঁড় করাতে জানে। পুলিশের সীমাবদ্ধতার বিষয়টি অসত্য নয় (যেমন_জনবল সংকট, আধুনিক অস্ত্র সংকট, দ্রুত যোগাযোগের জন্য গাড়ি সংকট ইত্যাদি)। কিন্তু মানুষ সীমাবদ্ধতা দেখবে কেন, শুনবেই বা কেন? এসব বিষয়ে দায় সরকারের। রাজধানীর আশপাশের গ্রামগুলোতে মানুষ রাত জেগে দলবেঁধে পাহারা দিয়ে সূর্যের আলো দেখে। মফস্বলের গ্রামের চিত্র তো আরো ভয়াবহ। সেখানে ক্ষমতাসীন মহলের নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগের স্থানীয় ক্ষমতাবানরাই যেন সর্বেসর্বা। প্রতিদিন নৃশংসতা, বর্বরতা, মানুষের শান্তি হরণের কাজ চলছে অব্যাহত গতিতে। পত্র-পত্রিকায় এর প্রতিফলন ঘটছে আর সরকারের দায়িত্বশীলরা 'কঠোর প্রতিকার' শব্দযুগলের মধ্যে সব কিছু বন্দি রাখছেন। এভাবে কত দিন চলবে? লেখাটি প্রকাশের মাত্র চার দিন পর সরকার তার শাসনকালের দুই বছর অতিক্রম করবে। আগের সরকারগুলোর রেখে যাওয়া জঞ্জালের কথা শুনে শুনে আর কত সময় কাটাবে মানুষ। সচেতনরা অবশ্যই জানেন, তাঁদের রেখে যাওয়া জঞ্জাল কম নয়। কিন্তু মানুষ নিরাপদে বাস করতে না পারার কারণটা সবই ওই সব জঞ্জালজাত নয়। এই যে ছাত্রলীগের কিছু গুণধর সারা দেশে তাণ্ডব চালাচ্ছে, এটা নিশ্চয়ই জঞ্জালের ফল নয়। ক্ষমতাসীন মহলের ক্ষমতাবানরা (অভিযোগ আছে সিংহ ভাগ ক্ষেত্রেই পুলিশের উপস্থিতিতে এমন ঘটনা ঘটেছে) যখন এমন উন্মত্ততা চালায় এবং বিষয়গুলো থাকে প্রায় প্রতিকারহীন, তখন চিহ্নিত সমাজবিরোধীরা তালি বাজায় এবং তারা তাদের দুষ্কর্মের পথটা সুগম করে। একইসঙ্গে তৎপর রয়েছে মৌলবাদী, জঙ্গি, জামায়াত-শিবির চক্র। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ঠেকাতে ওরা নানা অপতৎপরতায় লিপ্ত_এ অভিযোগ অমূলক নয়। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি কিংবা অন্য যেসব সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ঘটছে, এর সঙ্গে কি ক্ষমতাসীন মহলের বিপথগামীরা সম্পৃক্ত নয়? প্রধানমন্ত্রী নিজে ওই গুণধরদের কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ হয়ে ছাত্রলীগের সাংগঠনিক দায়িত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নিয়েছেন। এ বিষয়টি কি দলের নীতিনির্ধারকরা আমলে নিতে পেরেছেন? প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতা, সদিচ্ছা নিয়ে দুর্মখেরাও হয়তো প্রশ্ন তুলবেন না, কিন্তু অন্য দায়িত্বশীলরা কি যথাযথভাবে দায়িত্ব পালনে নিষ্ঠ? এসব প্রশ্ন কিন্তু উঠতে শুরু করেছে। এ দেশটা মায়াবী দৈত্যের ঘুমন্তপুরী হোক_এমনটি শুভবুদ্ধিসম্পন্ন কারোরই কাম্য হতে পারে না। ভুলে না গেলেই মঙ্গল, আত্মসমালোচনা হচ্ছে নিজেকে পরিশীলিত করার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি। তাঁরাই আত্মসমালোচনায় আগ্রহী যাঁরা নিজেদের শোধরাতে চান। তবে হতাশার বিষয় হচ্ছে, এ ধরনের মানুষের সংখ্যা সারা বিশ্বেই কম, বাংলাদেশে তো বটেই।
Source: কালের কন্ঠে প্রকাশিত
লেখক : সাংবাদিক
deba_bishnu@yahoo.com

দেশপ্রেম নিহত হয়নি, আহত হয়েছে (লেখক :সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শিক্ষাবিদ ও সমাজ বিশ্লেষক)


দেশ বলতে কেবল ভূমি বোঝায় না, ভূমি তো বোঝাবেই, কিন্তু দেশ ভূমির চেয়েও বড়, অনেক অনেক বড়। কেননা, দেশে মানুষ আছে, মানুষ থাকে এবং সে জন্যই দেশ অমন তাৎপর্যপূর্ণ। দেশপ্রেম বলতে আসলে দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসাই বোঝায়। আমাদের এই দেশপ্রেম বারবার পরীক্ষা ও নির্যাতনের মুখে পড়েছে। একাত্তরের কথা আমরা ঘুরে ঘুরে বলি। কেননা, চরম একটা পরীক্ষা তখনই হয়েছে। তার আগেও হয়েছে, পরেও হয়েছে, কিন্তু একাত্তরে যেমনটা হয়েছে বাঙালির জন্য দেশপ্রেমের পরীক্ষা, তেমনটি আর কখনো হয়নি। হানাদাররা সব দেশপ্রেমিক মানুষকেই সেদিন প্রাণদণ্ডাদেশ দিয়েছিল, অপেক্ষাটা ছিল আদেশ কার্যকর করবার মাত্র। স্বাধীনতার পর দক্ষিণপন্থী একটি বাংলা দৈনিক লিখেছিল_কমিউনিস্টদের আণ্ডাবাচ্চাসমেত খুঁজে বের করতে হবে, একাত্তর সালে চরম দক্ষিণপন্থী পাকিস্তানি সেনাবাহিনী প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য শিশু-বৃদ্ধ সব দেশপ্রেমিকেরই খোঁজ করছিল, কুকুরের মতো, গন্ধ শুঁকে শুঁকে। সন্দেহভাজন যাকেই পেয়েছে, হত্যা করেছে। কিন্তু ওই চরম নির্যাতনেও দেশপ্রেম নিহত হয়নি। নিহত হবে কী, উল্টো শক্তিশালী হয়েছে, অগি্নপরীক্ষিত ইস্পাতের মতো। মৃত্যু নিশ্চিত জেনেও বহু মানুষ সেদিন 'পাকিস্তান জিন্দাবাদ' বলতে সম্মত হয়নি, বরং 'জয় বাংলা' ধ্বনি দিতে দিতে বুক পেতে দিয়েছে গুলিতে নিহত হওয়ার জন্য।
অমনভাবে পরীক্ষিত যে দেশপ্রেম, স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে যুগের পর যুগ ধরে যে লড়ছিল, স্বাধীনতার পর এখন দেখছি তার ভীষণ দুর্দশা। স্বাধীনতার পর ক্রমাগত আঘাত পেয়েছে, পেয়ে পেয়ে বেশ কাতর হয়ে পড়ে রয়েছে। এ এক আশ্চর্য ব্যাপার, একটি লক্ষ্য ধরে এগোচ্ছিল, লক্ষ্যে পেঁৗছে দেখে সে আক্রান্ত, বিপদগ্রস্ত। এর অর্থ কী? স্বাধীনতার লক্ষ্য অর্জিত হয়ে গেছে তাই কি দেশপ্রেমের এই নিবীর্য অবস্থা? মোটেই তা নয়। ঘটনা সম্পূর্ণ বিপরীত। মুক্তি তো অনেক দূরের কথা, সে তো সহজে আসে না, আসার পরও বোঝা যায় যে আসেনি। একটা শ্রেণী আছে, যারা ক্ষমতায় যায় এবং অপচয় করে, পাচার করে দেয় সম্পদ। দেশকে উৎপাদনকারী হতে দেয় না, করে রাখে ব্যবসানির্ভর, যাতে তাদের সুবিধা হয়, কমিশন পায়। স্বাধীনতা এদেরই। আর এই স্বাধীনতার হাতেই দেশপ্রেম আহত হয়েছে, নিহত যে হয়নি, সেটা আমাদের কপালের জোর। এসব বিলাসী ক্ষমতাধররা সবাই আত্মপ্রেমিক, এদের মধ্যে দেশপ্রেমের নামগন্ধ নেই। ইতিহাসের মস্তবড় পরিহাস এটা যে পরাধীনতার কালে আমরা দেশপ্রেমিক ছিলাম, স্বাধীনতার পর উপক্রম হলো তাকে হারবার। অনেক কাল আমরা পরাধীন ছিলাম। ব্রিটিশের ২০০ বছর, পাকিস্তানের ২৪ বছর, সেই দীর্ঘ সময় ধরে স্বপ্ন ছিল আমরা স্বাধীন হব, আশা ছিল, ছিল ভরসা, স্বাধীনতার পর দেখা গেল মার খেয়েছে দেশপ্রেম স্বয়ং। দেশপ্রেম এবং আত্মপ্রেম পরস্পর বিরুদ্ধ বটে। কিন্তু প্রকৃত ও আলোকিত দেশপ্রেমের সঙ্গে আত্মপ্রেমের বিরোধ অবশ্যম্ভাবী নয়। কেননা, ব্যক্তির মুক্তি তো আসলে সমষ্টির মুক্তির মধ্যে নিহিত। একা কোন মানুষটা কবে স্বাধীন হয়েছে? দ্বীপে যে থাকে, অথবা বনবাসে, তার তুলনায় পরাধীন আর কে? দেবতা ও পশুর কথা আলাদা, স্বাভাবিক মানুষ স্বাধীন হয় সমাজের ভেতরে থেকেই এবং সমাজ যদি নষ্ট হয় তবে ব্যক্তি কী করে স্বাধীন হবে? যে পুকুরের পানি গেছে পচে, সেখানে কোন মাছটা নিরাপদ? পরাধীনতার যুগে আমরা রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে লড়েছি। ব্রিটিশের রাষ্ট্র আমাদের শত্রু ছিল, পাকিস্তানি রাষ্ট্রও আমাদের শত্রু ছিল, কিন্তু বাংলাদেশি রাষ্ট্র? সেও কি শত্রু? শত্রু না হোক, এ রাষ্ট্র জনগণকে প্রকৃত স্বাধীনতা দিচ্ছে না_এটা ঠিক। পাকিস্তান আমলে বৈরী রাষ্ট্রের পক্ষে ছিল মুসলিম লীগ, বিপক্ষে আওয়ামী লীগ। এখন বিএনপি ও আওয়ামী লীগ উভয় দলই রাষ্ট্রের পক্ষে, অর্থাৎ রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করার পক্ষে। কিন্তু জনগণের পক্ষে কে?
পাকিস্তানের পক্ষে লোকে একদিন জিন্দাবাদ দিয়েছিল, নইলে সে রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলো কী করে? সেদিন বিপক্ষে ছিল কংগ্রেস, পক্ষে মুসলিম লীগ। লোকে ভাবল, পাকিস্তান এলে তাদের জন্য স্বাধীনতা আসবে। পাকিস্তানের পক্ষে তাই ভোট পড়েছিল শতকরা ৯৭ ভাগ। সেই ভোট দেশপ্রেমের। কিন্তু দেখা গেল যে নতুন রাষ্ট্র প্রতিশ্রুতি রক্ষা করল না, স্বাধীনতা চলে গেল অল্পকিছু লোকের হাতে। সাত বছর পার হতে না হতেই ১৯৫৪ সালের প্রথম সাধারণ নির্বাচনে পূর্ববঙ্গের মানুষ আরো বর্ধিত হারে, এবার শতকরা ৯৮ জনই ভোট দিল পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার দাবিদার মুসলিম লীগের বিরুদ্ধে। এ ভোটও দেশপ্রেমিক ভোটই। তারপর বাংলাদেশে ভোট হয়েছে, কিন্তু স্রোতের মতো মানুষ যে একদিকে এগোবে সেটা ঘটেনি। কেননা, কোনো দলকেই মানুষ প্রকৃত অর্থে দেশপ্রেমিক মনে করেনি, মনে করেছে তারা ক্ষমতার জন্য লড়ছে।
বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর থেকে দুটি ঘটনা একই সঙ্গে এবং ক্রমাগত বর্ধিত মাত্রায় ঘটেছে। প্রথমটি হলো দেশপ্রেমের পতন, অপরটি বৈষম্যের বৃদ্ধি। এদের আলাদা আলাদা ব্যাপার মনে হবে, কিন্তু আসলে এরা একই বিকাশের দুটি ভিন্ন ভিন্ন প্রকাশ মাত্র। আর সেই বিকাশটা হলো পুঁজিবাদের। পুঁজিবাদ ছাড়া যে বিকল্প নেই এবং ওটিই যে সবচেয়ে ভালো আদর্শ, এই বোধ ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের নেতৃত্বের মধ্যে কার্যকর ছিল, পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনের নায়করাও এই আদর্শেই দীক্ষিত ছিলেন। ফলে পুঁজিবাদই কায়েম হয়েছে। আর পুঁজিবাদের নিয়মই তো এটা যে সেটা বৈষম্য বৃদ্ধি করবে, ধনীকে আরো ধনী এবং গরিবকে আরো গরিব করে ছাড়বে। সেটাই ঘটেছে; স্বাধীনতা চলে গেছে ধনীদের হাতে, গরিব হয়েছে বঞ্চিত মানুষ। আর ধনী যারা, তারা তো আসলে দেশপ্রেমিক নয়, তারা অত্যন্ত স্থূল ও কদর্যরূপে আত্মপ্রেমিক বটে। দেশপ্রেম থাকা না-থাকার বাস্তবতাটা বেশ পরিষ্কারভাবে চোখে পড়ে যদি শিক্ষাব্যবস্থার দিকে তাকাই। সেখানে ভবিষ্যতের নাগরিকরা সব প্রস্তুত হচ্ছে আড়মোড়া ভেঙে। যারা ইংরেজি মাধ্যমে পড়ছে, তারা তো স্বদেশপ্রেমের চর্চা করবার জন্য মোটেই অঙ্গীকারবদ্ধ নয়। অনেক টাকা বিনিয়োগ করছে, সেই টাকা তুলে নেবে, মুনাফা করবে। মুনাফার এই নগদ লোভটা যে দেশপ্রেমের পৃষ্ঠপোষক নয় সে তো বলার অপেক্ষাই রাখে না। যারা মাদ্রাসায় পড়ছে তারাও দেশের কথাকে অগ্রাধিকার দেবে না, অন্ন চিন্তাকেই প্রধান করবে।
পুঁজিবাদ যে দেশপ্রেমবিরোধী এটা স্বতঃসিদ্ধ। বাংলাদেশ ওই পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্তর্গত একটি রাষ্ট্র। বাংলাদেশকে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার বিশ্বব্যাপী আয়োজনের ওপর নির্ভরশীল থাকতে হচ্ছে, যে নির্ভরশীলতা মোটেই কমছে না, বরং দিন দিন বেড়েই চলেছে, ক্রমাগত।
Source: কালের কন্ঠ, ২রা জানুয়ারী ২০১১
লেখক : শিক্ষাবিদ ও সমাজ বিশ্লেষক